বাথরুমের আয়না
ঢাকার এক পুরনো বাসা। অনেকদিন খালি পড়ে ছিল। মৃণাল নামে এক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নতুন করে ভাড়া নেয়। বাসা সস্তা, তবে লোকজন বলে ওই বাসার বাথরুমে কিছু একটা আছে।
প্রথম কয়েকদিন সব ঠিকঠাকই চললো। কিন্তু চতুর্থ রাতে অদ্ভুত কিছু শুরু হলো।
রাত ২টা। হঠাৎ বাথরুম থেকে জলের শব্দ। মৃণাল ঘুম ভেঙে দেখে, সবকিছু বন্ধ। কিন্তু আয়নার সামনে পানি পড়ছে... যেন কেউ ভিজে হাত দিয়ে আয়নার ওপর থাপড় মারছে বারবার।
সে ভয় পেয়ে বাতি জ্বালিয়ে দেখে আয়নার মধ্যে নিজের প্রতিবিম্বটা একটু বিকৃত। চোখটা একটু লাল, আর ঠোঁটে একটা অদ্ভুত বাঁকা হাসি। যেন... নিজের নয়, অন্য কারও মুখ।
পরদিন সে আয়নাটা খুলে ফেলে দেয়। কিন্তু রাতে, আয়না ছাড়াই বাথরুমের দেয়ালে ভেসে ওঠে সেই একই মুখ।
এবার আর মুখে শুধু বিকৃত হাসি নয়, পুরো শরীরটাই দেখা যায়। আধা নগ্ন, জীর্ণ কাপড় পরা, চুল ভিজে, আর শরীর ভেসে উঠছে কেমন একটা কর্দমাক্ত স্যাঁতসেঁতে গন্ধে। মুখটা মুখ নয়, যেন পচা মাংসের দলা।
হঠাৎ মুখটা বলে উঠলো,
– আয়নায় জায়গা নেই, এবার তোকে নিতে হবে।
মৃণালের চিৎকার শুনে পাশের বাসার লোকজন ছুটে আসে। দরজা ভেতর থেকে বন্ধ। দরজা ভেঙে দেখে, মৃণাল বাথরুমে অজ্ঞান। কিন্তু দেয়ালে রক্তে লেখা—
“আমি এখন আয়নার বাইরে”
এরপর? বাথরুমটা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কেউ আর সে বাসায় থাকতে চায় না। তবে মাঝেমধ্যে নতুন ভাড়াটিয়ারা অভিযোগ করে—
আয়নাতে কেউ দাঁড়িয়ে হাসছে, পেছন থেকে।
0 Comments